কখনো ফুটবল খেলেছেন? ২২ জন খেলোয়াড়, সমান দুটি দলে বিভক্ত হয়। আসুন, ভিন্ন ধরনের একটি ফুটবল খেলার আয়োজন করি।

এক দলে ২ জন, আরেক দলে ২০ জন। এভাবে ভাগ করে খেলা শুরু করি। আপনি নিজেও সেই খেলায় অংশ নিয়েছেন। আপনি আছেন ওই ২০ জনের দলে।

খেলার প্রায় অর্ধেক সময় অতিবাহিত হবার পরে, স্কোর দেখা যাচ্ছে - ৭-১। যেই দলে ২০ জন খেলোয়াড়, সেই দল ৭ গোল খেয়েছে। হ্যাঁ, আপনার দলটি সংখায় দশগুন বেশি হবার পরেও ৭টি গোল খেয়েছে।

তেমন পরিস্থিতিতে আপনি কি এই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবেন? আল্লাহ কেন ওই দল দ্বারা আমাদের এতগুলো গোল খাওয়ালেন?

নাকি আপনি এই কথা বলবেন?হায়, আমরা এত অযোগ্য কেন? সংখায় দশ গুন বেশি হয়েও কেন এত গোল খাই?

হ্যাঁ, এটাই হলো ইহুদি ও মুসলিম এর ঘটনা। সারা বিশ্বে ইহুদির সংখা বড়োজোর ১ কোটি ৬০ লক্ষ। ওদিকে মুসলিমদের সংখা ১৮০ কোটি। কত গুন বেশি? ১১২ গুন বেশি !!

সারা বিশ্বের মুসলিম দেখতে হবে না। বাংলাদেশে মুসলিমের সংখা অন্তত ১৫ কোটি। অর্থাৎ, শুধুমাত্র বাংলাদেশে মুসলিমের সংখা সারা বিশ্বের ইহুদির চেয়ে প্রায় দশ গুন বেশি।

এই অল্প কয়েকজন ইহুদি মিলে, বিশাল সংখার মুসলিমদেরকে নির্যাতন করে !! এটা তো মুসলিমদের অযোগ্যতা। সংখায় একশো গুন বেশি হয়েও মাইর খাওয়া লাগে, এর চেয়ে অযোগ্যতা আর কি হতে পারে?

মুসলিমদের সেই অযোগ্যতা কোনটি? কি কারনে তারা সংখায় বেশি হয়েও নির্যাতিত হয়? কি কারনে ইহুদি এত শক্তিশালী হয়?

এর পেছনে একটাই কারন - একতা

রসুল (স) যখন ইসলাম প্রচার শুরু করেছিলেন, তখন প্রথম দিকে নিম্ন বর্ণের, নিম্ন গোত্রের লোকজন ইসলাম গ্রহণ করেছে। এমনকি আমাদের ভারত উপমহাদেশেও প্রথম দিকে নিম্ন বর্ণের হিন্দুরাই ইসলাম গ্রহণ করেছিল।

নিম্ন বর্ণের অমুসলিম লোকজন ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল ইসলামের সমতা দেখে। ইসলামে বর্ন-ভেদ, জাত-ভেদ নেই। ইসলামের নীতিতে সবাই আল্লাহর বান্দা, সবাই সমান। ইসলামের এই "সবাই সমান" নীতিটা দলে দলে নিম্ন জাতের অমুসলিমদের আকৃষ্ট করেছে।

ওদিকে এই সমতা ও একতার ধর্মটিকে মুসলিমরা কি করেছে? প্রথমে শিয়া ও সুন্নি নামে দুই ভাগ করেছে। এরপর চারজন ইমামের নামে চারটি মাজহাব বানিয়েছে। তারপর ইসলামের ভেতর ভক্তি ঢুকিয়ে, বানিয়েছে সুফিবাদ, বানিয়েছে পীরতন্ত্র আর মাজার পূজা। এরপর এক দল বানিয়েছে আহলে কোরআন ; আরেক দল বানিয়েছে আহলে হাদীস। এসব দেখে কেউ বানিয়েছে তাবলীগ জামাত ; কেউ বানিয়েছে মাইজভাণ্ডারি।

আজও আহলে হাদিস আর হানাফীর আলাদা মসজিদ বানানো হয়। আজও তারা মারামারি করে।

মুসলিমরা সংখায় একশো গুন বেশি। মুসলিমরা একটা ফু দিলেই ইহুদি উড়ে যাবে। অথচ, মুসলিমরা আজ নির্যাতিত। আল্লাহর পরীক্ষার অজুহাত দিয়ে, মুসলিমদের অযোগ্যতাকে আড়াল করবেন না।